নামাজে মনোযোগ বাড়াতে মনোবিজ্ঞান কি বলে? জেনে নিন!
আসসালামুআলাইকুম, নামাজে মনোযোগ বাড়াতে মনোবিজ্ঞান কি বলে ? জেনে নিন!
পবিত্র কুরআনে নামাজে মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন ,
তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হও বিশেষ করে মধবরতি সালাতের প্রতি এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দাঁড়াও । (সূরা বাকারাহঃ২৩৮)
অন্য আয়াতে বিনয়ী ও মনোযোগী মুসল্লিকে সফল আখ্যায়িত করা হয়েছে।ইরশাদ হয়েছে,
অবশ্যয় সফল্কাম হয়েছে মুমিনরা ,জারা নিজেদের নামাজে বিনয়ী নম্র। ( সুরা মুমিনুন ঃ১-২)
নামাজে একাগ্রতা হারানোর অনেক কারণ আছে ।
ইমাম গাঁজালি (রহঃ) নামাজে মনোযোগ ও একাগ্রতা হারানোর দুই ধরনের কারণ উল্লেখ করেছেন। বাহ্যিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন শব্দদূষণ ও শোরগোল। অন্যদিকে মানসিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিক্ষিপ্ত চিন্তা-ভাবনা , দুশ্চিন্তা , মানসিক অস্তিরতা ও উত্তেজনা ।
নামাজের প্রান হলো খুশু তথা অন্তরের বিনয় ও নম্রতা । নামাজে মনোযোগ ও একাগ্রতা বৃদ্ধি করার বিভিন্ন উপায় ও পদ্ধতির কথা উলামায়ে কিরাম উল্লেখ করেছেন। যেমন; কুরআনের অর্থের দিকে মননিবেশ করা ।মনে সবসময় এই ধারণা রাখার চেষ্টা করা যে আমি আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো ,আল্লাহ তায়ালা আমাকে দেখছেন।
রসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন , এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত করো যেন তাকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও তাহলে ভাবো তিনি তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন। ( সহিহ বুখারীঃ৫০)
আরো পড়ুনঃ আল্লাহর ৫০টি উপদেশ আপনাকে জ্ঞানী করে দিবে!!
এসব পদ্ধতির পাশাপাশি নামাজে একাগ্রতা বাড়ানোর জন্য মনোবিজ্ঞানিদের বাতলে দেওয়া কিছু পদ্ধতিও অবলম্বন করা যেতে পারে । তাদের মতে, ইবাদত এমন একটা মেডিটেশন না আমাদের মস্তিস্ককে আরো গভিরে নিয়ে আলফা ব্রেইন ওয়েভের সঙ্গে সংযুক্ত করে । আমাদের একাগ্রতাকে আরো নিবিড় ও প্রখোর করে তোলে , সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং মানসিক প্রশান্তি আনে।
মনোবিজ্ঞানের আলোকে ৩ টি উপায়
১. নামাজ আদায়ের জন্য নিরব ও কোলাহলমুক্ত পরিবেশ নিবাচন করা ।কারণ শব্দবহুল অসস্থিকর স্তানে আমদের অবচেতন মন ও অন্তর্দৃষ্টি রুদ্ধ হয়ে থাকে । তাই মনোবিজ্ঞানীরা ক্লায়েন্টের মনঃসংযোগ বিনষ্টকারী বিষয়গুলো হ্রাস করে থাকেন। কাজেই পুরুষের জন্য মসজিদই হতে পারে নামাজের উপযুক্ত স্থান। নারীদের জন্য ঘরের কোনো একটি স্থান নিধারন করা উচিত। যেখানে বাচ্চাদের শোরগোল ও চেঁচামেচির সম্ভাবনা আপেক্ষিকভাবে কম । নামাজে দাড়ানোর আগে এমন কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত , জা নামাজে দাড়ানোর পরও বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
২. থেরাপি চলাকালীন সাইকোলগজিস্টরা ক্লায়েন্টের চোখ নির্দিষ্ট কোন বিন্দুতে নিবদ্ধ করতে বলেন। খুব গভীর ভাবে ওই বিন্দুতে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখলে ক্লায়েন্টের দেহের অঙ্গ -প্রত্যঙ্গ শিথিল হয়ে আসে এবং মন ভারমুক্ত ও হালকা অনুভূত হয়। তখন থেরাপিস্ট নিশ্চিত হন যে ক্লায়েন্টে মনের গহীন স্তরে প্রবেশ করছে। বিষয়টি নামাজের সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িত। রাসুল (সাঃ) ধীর স্থিরভাবে নামাজ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। নামাজে তাড়াহুড়ো করা যাবে না ।প্রতিটি রোকন সযত্নে দীর্ঘ সময় নিয়ে আদায় করতে হবে । দাঁড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার স্থানে এবং রুকুর সময় পায়ের ব্রিদ্ধাঙ্গুলের নখে নিবদ্ধ রাখলে নামাজে নিমগ্রতা বৃদ্ধি পাবে বলে আসা করা যায়।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের ১০০টি ইসলামিক নাম ও তার বাংলা অর্থ. Meyeder Islamic Name
৩.সাইকোলোজিস্টরা ক্লায়েন্টের মনঃসংযোগ বৃদ্ধির জন্য আরেকটি উপায় অবলম্বন করেন তা হলো ;গভীরভাবে শ্বাস প্রশ্বাস । কারণ গভিরভাবে শ্বাস প্রশ্বাসের ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় ফলে ক্লায়েন্টের মানসিক চাপ প্রশমিত হয় এবং তারা সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। নামাজের ভেতরে বা আগে পরে আমরা না প্রয়োগ করতে পারি।
আল্লাহ তায়ালা আমদের সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদাত করার জন্য জীবন
ও জগতের ব্যাস্ততায় আমরা যদি আল্লাহর ইবাদতে গাফিলতি করি এবং নামাজে তাড়াহুড়ো করি তবে আমরা লক্ষ্যচ্যুত হবো আখিরাতে বিফল হবো জা কোনো ভাবেই কাম্য নয় ।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে নামাজে মনোযোগী হয়ার তৌফিক দান করুন আমিন।
Comments
Post a Comment