গুনাহ থেকে বাঁচার ৭০টি শক্তিশালী উপায়
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ, আজকে আমরা গুনাহ থেকে বাঁচার ৭০ টি উপায় সম্পর্কে জানবো। সবচেয়ে দামী আমল গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা ;
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযী.বলতেন , গুনাহ থেকে নিরাপদ থাকার মত সমকক্ষ আমল আমি কোনোটিকেই মনে করি না। (আদাবুদ্দুনয়া ওয়াদ্দিন ঃ১/৯৮)
হাসান বসরী রহ. বলতেন, আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয় গুলো থেকে বেঁচে থাকার চাইতে উত্তম কোন ইবাদাত আর কোন ইবাদাতকারী করতে পারে নি।
গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার ৭০ টি কার্যকরী উপায় হলো।
১.হিম্মত করুনঃ গুনাহের ফাদ থেকে বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে হিম্মত করতে হবে । আল্লাহর উপর ভরসা করে এই আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে যে , ইনশাআল্লাহ আমি পারবো। আমার রবের সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়ার এই চাকচিক্য থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবো ।এইভাবে প্রত্যয়ী হবেন তাহলে বেঁচে থাকাটা সহজ হবে ।
আরো পড়ুনঃ ৪৫টি শিরক! যা আমরা না জেনে নিয়মিত করে থাকি!!
২. নিয়ত করুন ,গুনাহের সুযোগ পেলেও গুনাহ করবো না।
৩.কোন গুনাহ কে ছোট করে দেখবেন না ।
৪. দোয়া করুন।
৫. মাঝে মাঝে নির্জনে চোখের পানি দিবেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর ভয়ে কাদে সে ব্যাক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না ।
৬. মুজাহাদা বা চেষ্টা চালানঃ এক দিনে বা এক রাতে আপনি গুনাহ ছেড়ে দিয়ে পবিত্র হয়ে উঠবেন , এ ধারণা ভুল বরং এর জন্য কষ্ট করতে হবে ।প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাতে হবে।
৭. ভাবুন,আমার উপর পাহারাদার আছে।
৮. আল্লাহ তায়ালাকে লজ্জা করতে হবে!
৯. ভাবুন আল্লাহর সরাসরি প্রশ্নের কি উত্তর দেব ?
১০. সবসময় সর্বাবস্থায় আল্লাহ আমার সঙ্গে আছেন , এই কল্পনা রাখার চেষ্টা করুন।
১১. নিজেকে নিজে বলুন আল্লাহকে ভয় কর।
১২. গুনাহের পরিণতি নিয়ে ভাবুন।
১৩. গুনাহ ত্যগ করার উপকারিতা নিয়ে ভাবুন।
১৪. হৃদয়ে ঈমানের বীজ যত্ন করে রাখুন।
১৫. গুনাহের উপকরণ ও উদ্দীপক বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকুন।
আরো পড়ুনঃ এই ১৬ শ্রেণীর ব্যাক্তির নামাজ কবুল হয় না!
১৬. দুষ্টু বন্ধু ও সাথীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
১৭. ভাবুন আমি শয়তানের সঙ্গি হয়ে জাচ্ছি না তো?
১৮. মাসে অন্তত ৩ দিন রোজা রাখুন।
১৯. বিবাহের ব্যাপারে সিরিয়াসলি চিন্তা ও চেষ্টা করুন।
২০. কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ্ বলার অভ্যাস করুন।
২১. মনের মধ্যে গুনাহের চিন্তা জাগ্রত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থের প্রতি খেয়াল রেখে কয়েকবার পড়ুন ; আউজুবিল্লাহ হিমিনাসসায়তনির রজিম ,অর্থ বিতারিত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। একটু আওয়াজ করে পড়ুন ।কমপক্ষে নিজে শুন্তে পান এমন আওয়াজ করে পড়ুন।দেখবেন এতে শয়তানের কুমন্ত্রণা কেটে যাবে ,ইনশাআল্লাহ্।
২২. হঠাত মৃত্যুর বিষয় স্মরণে রাখুন।
২৩. স্মরণ করুন, যখন আপনার মরাদেহ গোসল দেওয়া হবে।
২৪. স্মরণ করুন, অচিরেই আপনার জানাজা মানুষ কাঁধে করে নিয়ে যাবে।
২৫. স্মরণ করুন যখন আপনাকে কবরে রেখে দেওয়া হবে।
২৬. মাঝে মাঝে কবর জিয়ারত করুন।
২৭. স্মরণ করুন,আপ্নার প্রতিটি আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে পেশ করা হবে ঃগুনাহের প্রবল ইচ্ছা দমনে উক্ত চিন্তা বেশ কাজে আসে।
২৮. স্মরণ করুন, আপনার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে।
২৯. স্মরণ করুন আপনার আমলগুলো লিপিবদ্ধ হচ্ছে।
৩০. পুলসিরাত পারি দেওয়ার কথা স্মরণ করুন।
আরো পড়ুনঃ এই ১০টি হারাম কাজ করলে জাহান্নামের অধিবাসি হবেন!
৩১. স্মরণ করুন যখন মিজান স্থাপন করা হবে।
৩২. হাদিসে সাওবান মনে রাখবেন ,গোপন গুনাহ আমার আমল নষ্ট করে দিচ্ছে না তো ?
৩৩. ভাবুন গুনাহের কারণে নবীজির হাওজে কাউসার থেকে বঞ্চিত হতে হবে।
৩৪. মাঝে মাঝে জলন্ত আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে ভাববেন ।
৩৫. দুনিয়ার তুচ্ছতা সম্পরকে জানুন ঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন, পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয় ।( সূরা হাদিদঃ ২০)
৩৬. ভাবুন ,আল্লাহ আমাকে দেখছেন।
৩৭. একাকী নিভৃতে থাকবেন না ।
৩৮. গুনাহ ঢোকার দরজাগুলো বন্ধ করে দিন।
৩৯. অধিকহারে ইস্তেগফার করুন।
৪০. অধিকহারে তওবা করুন।
৪১. ঘুমানোর সময় ইসলামি আদবগুলো মেনে চলুনঃ বিশেষ করে অজু করে এবং আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবেন।
৪২. বেশি করে আল্লাহর জিকির করুণ ঃ কেননা জিকির শয়তান থেকে আত্মরক্ষার শক্তিশালী দুর্গ।
৪৩. রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় জিকিরের গুরুত্ব দিন।
৪৪. সময়ের মুল্য দিনঃ শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকী উসমানী দা.বা. বলেন, সময়কে গুনাহের মধ্য দিয়ে কাটানোর ব্যাপারে আল্লাহ কে ভয় করো । কখনও অবসর সময় কাটাবে না ,যখনই নির্জনে থাকবে ,অবসরে থাকবে তখনই নিজেকে কোন কাজে ব্যাস্ত করে নিবে । কাজটি দুনিয়াবি বৈধ কাজ হলেও অসুবিধা নেই। তবুও আল্লাহর নাফরমানির ভেতর সময় নষ্ট করো না ।
৪৫. আল- ওয়ালা ওয়াল-বারা ঠিক রাখুনঃ অর্থাৎ বন্ধুত্ব ও শত্রুতা উভয়টিই আল্লাহর জন্য।
আরো পড়ুনঃ নামাজে মনোযোগ বাড়াতে মনোবিজ্ঞান কি বলে? জেনে নিন!
৪৬. ইলম শিখুন।
৪৭. প্রতিদিন সকালে মনের সাথে অঙ্গীকার করুণ ঃ অর্থাৎ সকালে ঘুম থেকে জেগে নফসের কাছে এই ভেবে অঙ্গীকার নেবে যে , আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন গুনাহ করবো না।আমার দায়িত্বে যত ফরজ ,ওয়াজিব এবং সুন্নত আছে সব ঠিক্মতো আদায় করবো । আমার উপর আল্লাহর যত হক আছে,বান্দার হক আছে সব পুরোপুরি আদায় করবো।হে নফস! মনে রেখো ভুলক্রমে অঙ্গীকারের বিপরীত কোন কাজ করলে তোমাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
৪৮. নফসকে শাস্তি দিনঃ তাওবার সাথে সাথে নফসকে একটু শাস্তিও দিন ।যেমন; নফসকে বলুন তুমি প্রতিজ্ঞার খেলাফ কাজ করেছো ,সুতরাং শাস্তিস্বরূপ তোমাকে ৮ রাকাত নফল সালাত আদায় করতে হবে।
৪৯. পুরো দিন নিজের আমলের মুরাকাবা করুণ ।
৫০. শোয়ার আগে যাবতীয় কাজের হিসাব নিন।
৫১. পরকালের মুরাকাবা করুনঃ অর্থাৎ প্রতিদিন চোখ বন্ধ করে এই কথার ধ্যান করুণ জে,এই দুনিয়াই আমি চিরকাল থাকার জন্য আসি নি।
৫২. অঙ্গ -প্রত্যঙ্গের হিসাব নিন ।মাঝে মাঝে নিজের চোখ বন্ধ করে নিজের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের হিসাব নিন।
৫৩.ভাবুন আল্লাহ আপনাকে সৃষ্টি করেছেন কেন? কেন আপনি এখনও জীবিত ? অশ্লিলানন্দ ও পাপাচারে ডুবে থাকার জন্য ?
৫৪. মনে রাখবেন আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না ।
৫৫. ইসলামের সুন্দরজ ,সউহাদ্য ও সম্প্রিতি সম্পর্কে জানুন।
৫৬. দৃষ্টি সংযত রাখুন।
৫৭. এই কল্পনা ধরে রাখুন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চই আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত তার হকদারকে দিয়ে দিতে ।(সূরা নিসাঃ৫৮)
৫৮. আল্লহার নিয়মের কথা ভাবুনঃ নিজেকে বোঝান যে আল্লাহর একটা নিয়ম আছে ।কেউ যখন কোন গুনাহের কাজ শুরু করে তখন আল্লাহ তায়ালা তার সঙ্গে ধৈর্য ও সহঞ্চুতার আচরণ করেন। এতেও যদি বান্দা পিছু না হটে তাহলে তার সঙ্গে তিনি কিছুদিন জাবত দোষ ত্রুটি ধেকে রাখার আচরন করতে থাকেন । এরপরও ফিরে না আসলে আল্লহ তায়ালা তাকে সাজা দেয়ার ইচ্ছা করেন
৫৯. স্ত্রী কে সন্তুষ্ট রাখুন।
৬০. নিজের নফসের সাথে বিতর্ক করুণ।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা হলুদের ১০টি বিস্ময়কর স্বাস্থ্যগত উপকারীতা
৬১. পরিবেশ পাল্টান, গুনাহের পরিবেশ থেকে দূরে থাকুন।
৬২. তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন ঃ জাতে একদিকে আপনার ঘুম ও পূর্ণ হয় ,অন্যদিকে যথাসময়ে ফজরের জন্য উঠতেও পারেন।
৬৩. ভাবুন নির্জনতা আল্লাহ দেন কেন ? কেন আল্লহ তায়ালা আমদেরকে একাকীর সময়গুলো দান করেন?ঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন , আর তুমি তোমার রবের নাম স্মরণ করো এবং একাগ্রচিত্তে তার প্রতি নিমগ্ন হও ।( সূরা মুজ্জাম্মিলঃ ৮)
৬৪. ফজরের নামাজের বিশেষ গুরুত্ব দিন।
৬৫. প্রতিদিন এক পৃষ্ঠা হলেও কুরআন তিলাওয়াত করুন।
৬৬. জবানের হেফাজত করুন ।
৬৭. নিম্নের ৫ টি গুনাহ থেকে বাঁচুন ঃ তা হলো;
* কুরআনে কারীম অশুদ্ধ পড়ার গুনাহ থেকে বাঁচা।
* চোখের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। ( মা- বোন্দের জন্য বেপর্দার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা)
* অন্তরের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা।
* পুরুষদের তাকনুর নিচে কাপর পড়ার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা ।
* এক মুশঠির কমে দাঁড়ি কাটা ছাটার গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা।
৬৮. আল্লাহওয়ালাদের সোহবত গ্রহন করুন।
৬৯. আল্লাহওয়ালাদের জীবনি পড়ুন
৭০. নিম্নোক্ত দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়ুন;
আল্লা-হুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুংকারা -তিন আখলা - কি ওয়াল আহওয়া-ই ।
অরথঃ হে আল্লাহ ! আমি তোমার কাছে মন্দ আখলাক বা চরিত্র ও আমল এবং মন্দ কামনা -বাসনা থেকে পানাহ চাই ।( তিরমিজি)
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন ।আমিন।
Comments
Post a Comment